X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১
বেড়েছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী

সিম বিক্রি কমেছে, মিলছে প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম

হিটলার এ. হালিম
১৯ জানুয়ারি ২০১৬, ০০:২৬আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০১৬, ০২:১০

সিম বিক্রি কমেছে, মিলছে প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম দেশের মোবাইল অপারেটরদের সিম বিক্রি কমছে। গত নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে সিম বিক্রি কমেছে ৫ লাখ ৫৭ হাজার। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে (আঙুলের ছাপ) সিম বিক্রি শুরুর পরে নাকি ইন্টারনেট, ফেসবুক ও কয়েকটি যোগাযোগ অ্যাপ বন্ধ থাকায় বিক্রি কমেছে তা সুনির্দিষ্ট করে কেউ-ই বলতে পারেননি। তবে বিভিন্ন অপারেটরের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, সিম বিক্রি কমে যাওয়ার পেছনে এসবের প্রভাব রয়েছে।
তবে নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুলে দেওয়ায় এ সংখ্যা বেড়েছে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।
অন্যদিকে নিবন্ধনবিহীন এবং আগে থেকে চালু থাকা (প্রি-অ্যাক্টিভেটেড) সিম বাজারে বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছে না খুচরা ব্যবসায়ীরা। এখনও ছোট আকারের সিম বিক্রেতাদের কাছে মিলছে এসব সিম। রাজধানীর মিরপুর, ভাষাণটেক বাজার, উত্তরার কিছু এলাকা ঘুরে প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম বিক্রির তথ্য জানা গেছে।বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হওয়ার আগে অনেকেই এসব সিম মজুদ করে রেখেছেন। এপ্রিল মাস পর্যন্ত নিবন্ধনের সুযোগ থাকায় এসব সিমের কদর বেড়েছে। তবে একাধিক অপারেটরের কর্মকর্তারা বলেছেন, এমনটা হওয়ার কথা নয়। এ ধরনের সিম বিক্রি বন্ধ রয়েছে। অপারেটরগুলোর কর্মকর্তাদের জানানো হয়, প্রমাণ চাইলে বাজার থেকে সংগ্রহ করে আনা হবে- তখন তারা খুচরা বিক্রেতাদের ওপর দোষ চাপিয়ে বলেন, এটা সাধারণত আমাদের কাস্টমার কেয়ার বা ডিলার পয়েন্টে হয় না। খুচরা বিক্রেতারা করে থাকে। এর জন্য ডিলাররা দায়ী।  

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে গত অক্টোবরে দেশে মোট মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ১৩ কোটি ১৯ লাখ ৯৬ হাজার। নভেম্বরে ছিল ১৩ কোটি ৩১ লাখ ৬৩ হাজার। ডিসেম্বরে ১৩ কোটি ৩৭ লাখ ২০ হাজার। আপাতদৃষ্টিতে সিম বিক্রির পরিমাণ বাড়লেও প্রবৃদ্ধিতে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। নভেম্বরে অক্টোবরের তুলনায় গ্রাহক বেড়েছিল ১১ লাখ ৬৭ হাজার। ডিসেম্বরে এ সংখ্যা ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হয়নি। গ্রাহক বেড়েছে মাত্র ৫ লাখ ৫৭ হাজার।

প্রসঙ্গত, ডিসেম্বরের ১৬ তারিখ থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন এবং বিক্রি শুরু হয়। মূলত এ সময় থেকেই সিম বিক্রিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত জানুয়ারি মাসের শেষে দেশের মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা প্রকাশ হলে বোঝা যাবে কী ধরনের প্রভাব পড়েছে সিম বিক্রিতে। তারা উল্লেখ করেন, এখানে যে হিসাব দেওয়া হয়েছে তা ডিসেম্বর মাসের অর্ধেক সময়ের। জানুয়ারি পুরোটা গেলেই তবে আসল চিত্র বোঝা যাবে।

জানতে চাইলে গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশনস সৈয়দ তালাত কামাল বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সার্বিকভাবে হয়তো কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে। তবে এখনই কিছু বলা যাবে না। সঠিক চিত্র পেতে আরও  কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

মোবাইল অপারেটর রবির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর পরে সিম বিক্রি কমছে বলে আমি মনে করি না। তবে ইন্টারনেট, ফেসবুক ও ইন্টারনেটনির্ভর কয়েকটি যোগাযোগ অ্যাপ বন্ধ থাকায় বিক্রিতে প্রভাব পড়তে পারে।

মিরপুর ১১ নম্বরের খুচরা সিম বিক্রেতা মোহাম্মদ পলাশ জানালেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম বিক্রি চালু হওয়ার আগে প্রতিদিন তিনি ৩০-৩৩টি (সব অপারেটর) বিক্রি করতেন। এখন ৫-৭টা সিম বিক্রি করতেই দিন শেষ। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সব অপারেটর বায়োমেট্রিক ডিভাইস সরবরাহ করলে বিক্রি কিছুটা বাড়তে পারে। তবে আগের অবস্থায় আর কখনওই যাবে না বলে তিনি হতাশাও প্রকাশ করেন। তিনি আরও  জানান, তার মতো খুচরা সিম ব্যবসায়ীরা ১৬ ডিসেম্বরের আগেই প্রত্যেকে ৪০০-৪৫০টি প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম সংগ্রহ করে রেখেছিলেন। এসব সিম কিনতে কিছুই প্রয়োজন হয় না। মোবাইলে সিম ঢুকিয়ে ব্যালেন্স রিচার্জ করলেই কথা বলা যায়। তিনিই বলেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে বিক্রির চেয়ে প্রি-অ্যক্টিভেটেড সিমের চাহিদা বেশি।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এখনও খুচরা সিম বিক্রেতাদের হাতে সব মোবাইল অপারেটরের বায়োমেট্রিক ডিভাইস না পৌঁছানোয় অনেকে সিম বিক্রি করতে পারছে না। ডিভাইস পৌঁছালে বিক্রি বাড়তে পারে বলে অভিমত তাদের।

 

ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েছে

এ দিকে নভেম্বর মাসে দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যায় বড় ধরনের ধাক্কা লাগলেও ডিসেম্বরে খাতটি তা সামলে উঠেছে।

অক্টোবরে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল ৫ কোটি ৪৬ লাখ ৫৮ হাজার। নভেম্বরে  কমে দাঁড়ায় ৫ কোটি ৩৯ লাখ ৪১ হাজারে। ডিসেম্বরে কিছুটা বেড়েছে। বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে ৫ কোটি ৪১ লাখ ২০ হাজার মানুষ।

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমে যাওয়ার পেছনে স্পষ্টতই কাজ করেছে ইন্টারনেট বন্ধ হওয়া, ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম ও যোগাযোগ অ্যাপ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার (১৮ নভেম্বর এসব সরকার বন্ধ করে দেয়) প্রভাব। মোবাইলফোন অপারেটররাও বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

/এইচএএইচ/এফএ/আপ-এনএস/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন